December 24, 2024

শিরোনাম
  • Home
  • ভ্রমণ
  • সেন্ট মার্টিন, পার্বত্য অঞ্চলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, বিধিমালা সংশোধন ও মূসক প্রত্যাহারের দাবী টোয়াবের

সেন্ট মার্টিন, পার্বত্য অঞ্চলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, বিধিমালা সংশোধন ও মূসক প্রত্যাহারের দাবী টোয়াবের

Image

পর্যটন শিল্পের শীর্ষস্থানীয় বাণিজ্য সংগঠন ট্যুর অপারেটরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব) সরকারের সেন্ট মার্টিন বিষয়ক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে, পার্বত্য অঞ্চলে ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞা বাতিল, ট্যুর অপারেটর সেবার উপর ভ্যাট প্রত্যাহার এবং ট্যুর অপারেটর ও ট্যুরগাইড আইনের বিধিমালায় উল্লেখিত জামানত বাতিল ও বিভিন্ন অসংগতি দূরীকরণ বিষয়ক একটি সংবাদ সম্মেলনের আজ বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর, ২০২৪) ঢাকাস্থ জাতীয় প্রেস ক্লাব এর আব্দুস সালাম হলে আয়োজন করেছে।

টোয়াবের সভাপতি মোঃ রাফেউজ্জামান বলেন, আমাদের প্রবল আপত্তি সত্বেও সেন্টমার্টিনে রাত্রিযাপন ও পর্যটক যাতায়াত সীমিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, নভেম্বর মাসে সেন্টমার্টিনে কোনো পর্যটক রাত্রিযাপন করতে পারবেন না। আর ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে দিনে সর্বোচ্চ দুই হাজার পর্যটক সেন্টমার্টিন ভ্রমণ করতে পারবেন এবং  রাত্রিযাপন করতে পারবেন। আর ফেব্রুয়ারি মাসে সেন্টমার্টিনে সরকার পর্যটক যাতায়াত বন্ধ রাখবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার জন্য।

এতে করে পর্যটন শিল্প ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হবে এবং সাধারণ উদ্যোক্তারা সর্বশান্ত হয়ে যাবে। সেন্টমার্টিনে প্রায় ১০ হাজার মানুষ বাস করে। এরা সবাই পর্যটনের উপর নির্ভরশীল। সেন্টমার্টিনে পর্যটন বন্ধ হলে এরা সবাই বেকার হয়ে যাবে। সেই সাথে উদ্যোক্তাদের আর্থিক বিনিয়োগ এখন ঝুঁকির মুখে পড়বে। শুধু তাই নয়, পার্বত্য অঞ্চলে ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞার কারনেও পর্যটন ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে এবং উদ্যোক্তারা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।

এছাড়ও ট্যুর অপারেটরদের নিবন্ধন সংক্রান্ত নতুন গেজেটে কিছু নিয়ম ও শর্তাবলী উল্লেখ করা হয়েছে, যা মেনে চলা আমাদের জন্য অত্যন্ত কঠিন। গেজেটে উল্লেখিত বিধিনিষেধ ও নীতিমালা বাস্তবায়ন হলে পর্যটন শিল্প ক্ষতিগ্রস্থ হবে।

বিধিমালায় দেখা যায় ট্যুর অপারেটর ও ট্যুর গাইড (নিবন্ধন ও পরিচালনা) লেইসেন্স আবেদনের ক্ষেত্রে ৫০,০০০.০০ (পঞ্চাশ হাজার) টাকা নিবন্ধন সনদ ফি, ১০,০০,০০০.০০ (দশ লক্ষ) টাকা ব্যাংক স্থিতির সার্টিফিকেট ও ৩,০০,০০০.০০ (তিন লক্ষ) টাকা জামানত প্রদান করতে হবে যা ট্যুর অপরেটরদের জন্য সম্ভবপর নয়। এতে করে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে নিতে নতুন উদ্দোক্তারা নিরুৎসাহিত হবে।

তিনি বিকাশমান পর্যটন শিল্পের স্বার্থে ট্যুর অপারেটরদের সেবার উপর মূসক আরোপ রহিত করার দাবীও জানান। কারন ট্যুর অপারেটর সেবার উপর ১৫% মূসক ধার্য করার ফলে প্যাকেজ মূল্য তথা ট্রাভেল কস্ট বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাতে করে গোটা পর্যটন শিল্প বিশেষকরে অন্তর্গামী ও আভ্যন্তরীন পর্যটন দারুনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যেহেতু পর্যটন শিল্প একটি ব্যাপক ও অনেকগুলো সেক্টরের সাথে সম্পৃক্ত, মূসক আরোপের ফলে অগ্রসরমান বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের বিকাশের অন্তরায় হয়ে দাঁড়াতে পারে।

সংবাদ সম্মেলনে টোয়াবের পক্ষ থেকে সেন্ট মার্টিনে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক ব্যবহার কঠোরভাবে বন্ধ করে রাত্রি যাপনসহ যাবতীয় বিধি-নিষেধ ব্যাতিরেকে পর্যটন চালু রাখা, টেকনাফ থেকে সেন্ট মার্টিন ভ্রমণে বিকল্প পথ তৈরী করা, ট্যুর অপারেটর ও ট্যুর গাইড (নিবন্ধন ও পরিচালনা)  লাইসেন্স ও নবায়ন ফি ও ব্যাংক স্থিতি কমানো ও জামানত বাতিল, ট্যুর অপারেটর সেবার উপর মূসক প্রত্যাহার, সারাবছরব্যাপী সুন্দরবনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল চালু রাখা, পার্বত্য অঞ্চলে ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও পর্যটকদের জন্য পারমিশন গ্রহণ সহজীকরণ করা ইত্যাদি দাবী জানানো হয়।

টোয়াবের সদ্য সাবেক সভাপতি ও সেন্টমার্টিন দ্বীপ পরিবেশ ও পর্যটন রক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান শিবলুল আজম কোরেশী বলেন, পরিবেশসহ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং পর্যটনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলা করে টেকসই পর্যটন উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে। তিনি সেন্ট মার্টিনে সাগরের পানি থেকে মিঠা পানিতে পরিনত করার নিমিত্তে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপন, পচনশীল বর্জ্য ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে বায়োগ্যাসে পরিনত করার ব্যাবস্থা গ্রহন, জেনারেটরের ব্যবহার বন্ধ করে পরিবেশ বান্ধব সোলার প্লান্ট স্থাপন, ইট-বালু-সিমেন্ট-রড ইত্যাদি ব্যবহার করে স্থায়ী স্থাপনা নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদির সুপারিশ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব) এর পরিচালকবৃন্দ, ট্যুরিজম রিসোর্ট ইন্ডাস্ট্রিজ এসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ট্রিয়াব) প্রতিষ্ঠাত সভাপতি, ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজারের নেতৃবৃন্দ, সেন্টমার্টিন দ্বীপ পরিবেশ ও পর্যটন রক্ষা-উন্নয়ন জোটের নেতৃবৃন্দ, সেন্টমার্টিন দোকান মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ, সেন্টমার্টিন হোটেল মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ,বোট মালিক সমবায় সমিতির নেতৃবৃন্দ, মৎসজীবী মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ, বাংলাদেশ স্লিপার এসি বাস মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ, জাহাজ মালিকদের সংগঠন সি ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (স্কুয়াব), এর নেতৃবৃন্দ এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

পরে টোয়াবের সম্মানিত প্রেসিডেন্ট সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।

Scroll to Top