রপ্তানিমুখী পোশাক শিল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করতে সোমবার (০৬ জানুয়ারি, ২০২৫) বিজিএমইএ-র সাধারণ সদস্যদের নিয়ে এক উন্মুক্ত সভার আয়োজন করেছিল নির্বাচনী জোট ‘ঐক্য পরিষদ’। ঢাকার উত্তরা ক্লাবে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে ২৫০ জনেরও বেশি ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা অংশ নেন। বিজিএমইএ-র আসন্ন নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে আয়োজিত এই সভায় সদস্যরা তাদের মতামত ও সমস্যাগুলো তুলে ধরেন।
ঐক্য পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক মোহসিন আলম সভার সভাপতিত্ব করেন। আলোচনায় এই খাতের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো যেমন এইচএস কোডের জটিলতা দূরীকরণ, সরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন, ব্যবসা সহজীকরণ, এক্সিট পলিসি, এবং পণ্যের সুষম মূল্য নির্ধারণের মতো ইস্যুগুলো উঠে আসে। তিনি বলেন, “বিজিএমইএ-কে অবশ্যই সদস্যদের স্বার্থে কাজ করতে হবে। এটি অভিজ্ঞ এবং যোগ্য ব্যক্তিদের নেতৃত্বে অরাজনৈতিকভাবে পরিচালিত হওয়া উচিত।”
সাধারণ সদস্যরা বিজিএমইএ-র বিভিন্ন বিষয়ে তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করেন। কেউ কেউ অভিযোগ করেন, সংগঠনটি বর্তমানে ভবন ভাড়া দিয়ে আয় করতে বাধ্য হচ্ছে, যা সংগঠনের জন্য লজ্জাজনক। সদস্যরা প্রস্তাব দেন যে বন্ড অটোমেশন ব্যাংকিং সিস্টেম এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে সংযুক্ত করা উচিত, যাতে সহজে অ্যাক্সেস পাওয়া যায়। এছাড়া, ছোট এবং মাঝারি কারখানাগুলোকে আর্থিক প্রণোদনা দেওয়ার দাবি তোলা হয়।
সদস্যরা ভ্যাট এবং ট্যাক্স সম্পর্কিত সমস্যাগুলোর সমাধান, বড় কারখানাগুলোর সহযোগিতার মাধ্যমে নতুন উদ্যোক্তা তৈরির প্রয়োজনীয়তা এবং বিজিএমইএ হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন নিয়েও আলোচনা করেন।
বিজিএমইএ সদস্য কাফিলউদ্দিন শিল্পখাতে কাস্টমস, বিদ্যুৎ এবং ব্যাংকিং সেবার জটিলতার কথা উল্লেখ করে স্বচ্ছ নির্বাচনের গুরুত্ব তুলে ধরেন। চৈতি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম বলেন, “আপনারা যদি আমাদের চেয়ে ভালো নেতৃত্ব নিয়ে আসেন, আমি আমার পদ থেকে সরে দাঁড়াতে প্রস্তুত। বিজিএমইএ আমাদের ব্যবসা সংগঠন, এটি ব্যক্তিগত ব্যবসার স্থান নয়। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচন হলে আমি আপনাদের পাশে থাকব।”
এই সভার মাধ্যমে ঐক্য পরিষদ আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের অভিযাত্রার সূচনা করে। সংগঠনটি বিজিএমইএ-র সাধারণ সদস্যদের অধিকার রক্ষায় কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেয় এবং সংগঠনের কার্যক্রমে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক ও গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানায়।