বাংলাদেশ গার্মেন্টস প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) ২০২৫-২০২৭ মেয়াদের নির্বাচন সামনে রেখে তাদের কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করেছে সম্মিলিত পরিষদ। চৈতি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবুল কালামের নেতৃত্বাধীন এই প্যানেল বুধবার (২১ মে, ২০২৫) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ১২ দফা ভিত্তিক ইশতেহার তুলে ধরে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাবেক বিজিএমইএ সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান, সাবেক সভাপতি ও প্যানেল সমন্বয়ক ফারুক হাসানসহ প্যানেলের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।






প্যানেল লিডার আবুল কালাম বলেন, “পোশাক শিল্প আজ এক নতুন যাত্রার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে। লক্ষ্য একশো বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি। তবে সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে আমাদের আরও সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা ও বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নিতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে গ্লোবাল কমপ্লায়েন্স, এইচআরইডিডি, সিএসডিডিডি ও ট্রেসিয়াবিলিটি ইস্যু গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। একইসাথে গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকট এবং উৎপাদন খরচ বৃদ্ধিও বড় চ্যালেঞ্জ। এসব মোকাবিলায় সম্মিলিত পরিষদ প্রস্তুত।
সম্মিলিত পরিষদের ঘোষিত ১২ দফা পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে:
১. এসএমই সহায়তা সেল – ক্ষুদ্র ও মাঝারি পোশাক কারখানার জন্য বিশেষ সেল গঠনের মাধ্যমে কাঠামোগত ও নীতিগত সমস্যা সমাধান।
২. জ্বালানি নিরাপত্তা – গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সমন্বয় এবং সংকটে থাকা কারখানার জন্য বিকল্প প্রণোদনা।
৩. ইন্ডাস্ট্রি ৪.০ প্রস্তুতি – শ্রমিক থেকে ম্যানেজার পর্যন্ত দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালু।
৪. অর্থায়নের সহজতা – বিশেষায়িত গ্রিন ফান্ডিং ডেস্ক ও সুদের হার হ্রাসে নীতিগত সহায়তা।
৫. বাজার বৈচিত্র্য – ইউরোপ-আমেরিকার বাইরে নতুন বাজার খুঁজে পণ্য রপ্তানি সম্প্রসারণ।
৬. বিকল্প প্রণোদনা কাঠামো – এলডিসি উত্তরণের পর টিকে থাকার জন্য বিকল্প নীতিমালা।
৭. রাজস্ব ও বাণিজ্য সহায়তা – কাস্টমস ও বন্ড ব্যবস্থার সংস্কার, গ্রিন চ্যানেল চালুর উদ্যোগ।
৮. ওয়ান-স্টপ রপ্তানি সহায়তা সেল – এসএমই, নারী ও দ্বিতীয় প্রজন্মের উদ্যোক্তাদের জন্য সহায়তামূলক প্ল্যাটফর্ম।
৯. সামাজিক কমপ্লায়েন্স কাঠামো – আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ইউনিফায়েড কোড অব কনডাক্ট প্রণয়ন।
১০. সবুজ শিল্পায়ন – নবায়নযোগ্য জ্বালানি, ডিকার্বোনাইজেশন ও সার্কুলার অর্থনীতির ওপর গুরুত্ব।
১১. ‘মেইড ইন বাংলাদেশ–প্রিমিয়াম’ ব্র্যান্ডিং – বাংলাদেশকে আধুনিক ও টেকসই সোর্সিং গন্তব্য হিসেবে উপস্থাপন।
১২. অ্যাপারেল ডিপ্লোম্যাসি ও এক্সিট পলিসি – বৈশ্বিক বাজারে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার এবং সম্মানজনকভাবে কারখানা বন্ধের সুযোগ তৈরি।


সম্মিলিত পরিষদ বিশ্বাস করে, পোশাক খাতের টেকসই অগ্রযাত্রা নিশ্চিত করতে হলে এখন সময় বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের। তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, নির্বাচিত হলে এই ১২ দফা পরিকল্পনাকে অগ্রাধিকার দিয়ে শিল্পখাতকে আগামী পর্যায়ে উন্নীত করবে।