বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) এবং জাতিসংঘের প্রকল্প সেবা কার্যালয় (ইউএনওপিএস)-এর যৌথ উদ্যোগে আজ বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫) ঢাকায় “দ্য পাওয়ার অব লোকাল: হাউ গ্রাসরুটস কমিউনিটিজ ড্রাইভ এসডিজি অ্যাচিভমেন্ট ইন বাংলাদেশ” শীর্ষক উচ্চপর্যায়ের গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৈঠকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ ও নেতৃত্বের গুরুত্বের ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়। সরকার, কূটনৈতিক প্রতিনিধি, শিক্ষাবিদ, তরুণ প্রতিনিধি ও তৃণমূল নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন মহলের প্রতিনিধিরা বিআইআইএসএস অডিটোরিয়ামে একত্রিত হয়ে বাংলাদেশের উন্নয়নচ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় স্থানীয় উদ্ভাবন ও সুশাসনকে কীভাবে কাজে লাগানো যায়, তা নিয়ে মতবিনিময় করেন।

বৈঠকের উদ্বোধনী বক্তব্যে বিআইআইএসএস-এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল ইফতেখার আনিস বলেন, “বাস্তব অগ্রগতি নিহিত রয়েছে আমাদের স্থানীয় সম্প্রদায়ের হাতে। তাদের অভিজ্ঞতা ও সমাধান নীতি প্রণয়নে অমূল্য।”
ইউএনওপিএস বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ম্যানেজার মি. সুধীর মুরালিধরন বলেন, “বিআইআইএসএসের সঙ্গে মিলে আমরা স্থানীয় কণ্ঠস্বরকে আরও জোরালো করছি। অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিকল্পনা এবং কমিউনিটি-নেতৃত্বাধীন উদ্যোগই টেকসই পরিবর্তনের ভিত্তি।”
প্রধান অতিথি হিসেবে নরওয়ের রাষ্ট্রদূত হাকন আরাল্ড গুলব্রান্ডসেন বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতিকে প্রশংসা করে বলেন, “স্থানীয় শাসনব্যবস্থায় বিনিয়োগ বিলাসিতা নয়, এটি অপরিহার্য।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মারুফুল ইসলাম মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে বলেন, “আমাদের ভিশন আছে, কিন্তু তা বাস্তবায়নে স্থানীয় পর্যায়ের অভিনেতাদের ক্ষমতায়ন, স্বায়ত্তশাসন ও তথ্যব্যবস্থার শক্তিশালীকরণ প্রয়োজন।”
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ইকবাল আব্দুল্লাহ হারুন জানান, “এসডিজি বাস্তবায়নে স্থানীয় সরকার সংস্থাগুলোকেই নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাদের সাফল্যই আমাদের জাতীয় সাফল্য।”
ইউরোপীয় ইউনিয়নের উন্নয়ন সহযোগিতা বিভাগের প্রধান ড. মিশাল ক্রেইজা বলেন, “এসডিজি শুধুমাত্র উপর থেকে নিচের কাঠামোয় সফল হতে পারে না। স্থানীয় সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণ অপরিহার্য। নারীকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে এসডিজি স্থানীয়করণে ইইউ ধারাবাহিকভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছে।”

তৃণমূল পর্যায়ের প্রতিনিধি হিসেবে নিজেরা করি সমন্বয়কারী খুশি কবির বলেন, “যখন সম্প্রদায় নিজেরাই উন্নয়ন পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করে, তখন তা অধিকতর টেকসই ও ন্যায্য হয়।”
আলোচনার শেষে স্থানীয় তথ্যব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ, অর্থায়ন প্রক্রিয়া উন্নত করা এবং সরকার, উন্নয়ন সহযোগী ও নাগরিক সমাজের মধ্যে গভীরতর সহযোগিতা জোরদারের মাধ্যমে এসডিজি অর্জনের গতি বাড়ানোর আহ্বান জানানো হয়।