বেসরকারি স্বাস্থ্যখাতকে কেবল মুনাফাকেন্দ্রিক ব্যবসায় সীমাবদ্ধ না রেখে সেবামুখী করার আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। তিনি বলেন, প্রাইভেট সেক্টরকে ‘সার্ভিস-ওরিয়েন্টেড বিজনেসে’ রূপান্তর করতে হবে, ‘বিজনেস-ওরিয়েন্টেড সার্ভিসে’ নয়।
শনিবার (৩০ আগস্ট ২০২৫) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে দৈনিক বণিক বার্তার আয়োজিত ‘বাংলাদেশ হেলথ কনক্লেভ–২০২৫’-এ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
চিকিৎসা ব্যয়ে বৈষম্য প্রসঙ্গে নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে ডা. তাহের বলেন, তার হাসপাতালে সিজারিয়ান ডেলিভারির খরচ ২৫–৩০ হাজার টাকা, যেখানে সার্জনের ফি ৬–৭ হাজার। তবে একই ডাক্তার চৌদ্দগ্রামে একই অপারেশন করলে মাত্র ৩ হাজার টাকা নেন। তিনি বলেন, “লোকেশনভিত্তিক এই বৈষম্য দূর করাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ।”
ডা. তাহের প্রাইভেট খাতে চিকিৎসা ব্যয় কমানো সম্ভব বলে মনে করেন এবং এজন্য উদ্যোক্তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে উল্লেখ করেন। তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্য খাতে বাজেট বরাদ্দ যথেষ্ট নয়; অন্তত ৬–৮ শতাংশ বাজেট বরাদ্দ এবং পপুলেশন ভিত্তিক হিসাব প্রযোজ্য হওয়া উচিত।
তিনি পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (PPP) মডেলকে আরও বিস্তৃত করার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে প্রাইভেট সেক্টরকে গুরুত্ব দিতে হবে এবং ক্ষমতাধারীদের নীতি বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার ওপর জোর দেন।
এর আগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ক্ষমতায় এলে বেসরকারি হাসপাতাল ও ফার্মাসিউটিক্যাল খাতকে সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে রাখার পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি বলেন, “জিডিপির ৫ শতাংশ পর্যন্ত স্বাস্থ্যসেবায় বিনিয়োগ করা হবে।”
তবে প্রধান উপদেষ্টা সায়েদুর রহমান এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছেন। তিনি বলেন, জনগণকে প্রয়োজনীয় ওষুধ ও সেবা পৌঁছে দিতে স্বাস্থ্যখাতের ওপর কিছু নিয়ন্ত্রণ থাকা প্রয়োজন। তিনি যুক্তি দেন, বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই স্বাস্থ্যখাতকে একটি মাত্রায় নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ বলেন, দেশে বড় অবকাঠামো থাকলেও ডাক্তার, নার্স ও দক্ষ জনবল সংকটে সাধারণ মানুষ মানসম্মত চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে না।