মঙ্গলবার (৮ জুলাই ২০২৫) বিজিএমইএ কার্যালয়ে পোশাক শিল্পের নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নবম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও এরিয়া কমান্ডার (সাভার) এবং বিজিএমইএ বোর্ডের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান এবং জিওসি মেজর জেনারেল মোঃ মঈন খান সভায় নেতৃত্ব দেন। এছাড়াও বিজিএমইএ এর পরিচালক, বিভিন্ন কারখানার চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক, সেনাবাহিনী, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ, ডিজিএফআই ও এনএসআই প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, অতীতের সংকটময় সময়েও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী যেভাবে ধৈর্য ও দক্ষতার সাথে দেশের পাশে থেকেছে, বিশেষ করে শিল্প রক্ষায় যৌথবাহিনীর ভূমিকা প্রশংসনীয়। তিনি শিল্পে সেনাবাহিনীর সহযোগিতা অব্যাহত রাখার জন্য কৃতজ্ঞতা জানান।
আলোচনায় উঠে আসে যে, শ্রমিকদের মধ্যে অহেতুক দাবিতে ধর্মঘট, তুচ্ছ ঘটনায় রাস্তায় নেমে আসা, কারখানা ভাঙচুর, রাস্তাব্লক, ইপিজেডে বহিরাগতদের চাকরির দাবিতে প্রতিবাদ, এমনকি কোনো সমস্যা না থাকলেও উদ্দেশ্যমূলক গুজব ও উসকানির মাধ্যমে অস্থিরতা তৈরির ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে।
উদ্যোক্তারা ঝুট সন্ত্রাস, কিশোর গ্যাং এবং সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর দৌরাত্ম্যে শিল্পাঞ্চলে অশান্তি প্রসঙ্গে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং এসব সমস্যা সমাধানে সেনাবাহিনীর সহায়তা চান।
জিওসি মেজর জেনারেল মঈন খান বলেন, পোশাক শিল্প দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি এবং এর নিরাপত্তা নিশ্চিত রাখতে সেনাবাহিনী দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে কারখানার অভ্যন্তরীণ শ্রম সমস্যা সমাধান না হলে বাহ্যিক নিরাপত্তা যথেষ্ট নয়। এজন্য একটি নিরাপত্তা বিষয়ক মাস্টার প্ল্যান তৈরি করা হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, ঝুট সমস্যার সমাধানে একটি অকশন হাউজ প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব বিবেচনায় রয়েছে, যা হলে কারখানাগুলো ঝামেলা ছাড়া ঝুট বিক্রি করতে পারবে।
তিনি উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান, সময়মতো বেতন ও বকেয়া পরিশোধ নিশ্চিত করতে এবং সঠিক তথ্য দিয়ে সেনাবাহিনীকে সহায়তা করতে। পাশাপাশি আশ্বস্ত করেন, কারখানার বাইরে যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় সেনাবাহিনী পাশে থাকবে।
সভায় শ্রমিক ফেডারেশনগুলোকে একটি কনফেডারেশনে ঐক্যবদ্ধ করার সম্ভাবনাও আলোচনায় আসে, যাতে শিল্পে দীর্ঘমেয়াদি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকে।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সহ-সভাপতি ইনামুল হক খান (বাবলু), সহ-সভাপতি মোঃ রেজোয়ান সেলিম, সহ-সভাপতি (অর্থ) মিজানুর রহমান, সহ-সভাপতি মো. শিহাব উদ্দোজা চৌধুরী এবং পরিচালকগন।