চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ
চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দীন বলেছেন, আমাদের যেসব কৃষ্টি, কালচার, সংস্কৃতি রয়েছে এগুলোর বহিঃপ্রকাশ মেলার মাধ্যমে তুলে ধরা হয়।
‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি, সেখানে বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার জন্য আমাদের একটা প্রত্যয় রয়েছে।
আমরা এই বাংলাদেশকে বৈষম্যমুক্ত করে ছাড়বো ইন্শাআল্লাহ। সকলের মতামতের ভিত্তিতে আমরা এমন একটি স্থান খুঁজে বের করব যেখানে স্থায়ীভাবে বিজয় মেলাসহ বিভিন্ন মেলা উদযাপন করা যাবে’।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় নগরের কাজির দেউরী এলাকার সার্কিট হাউজ সংলগ্ন পুরনো শিশু পার্ক মাঠে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন আয়োজিত বিজয় মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় সংগীতের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বেলুন উড়িয়ে ও ফিতা কেটে ৬দিন ব্যাপী (১১-১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত) বিজয় মেলার শুভ উদ্বোধন করেন বিভাগীয় কমিশনার।
তিনি বলেন, আমরা শুধু কর্মের মধ্যে থাকব না। সত্যিকার অর্থে এখানে স্থায়ী মেলার জন্য একটি নির্ধারিত মাঠের প্রয়োজন। বাঙালি সংস্কৃতি তুলে ধরার জন্য এখানে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। আমাদের কালচারাল উন্নতি ও শিক্ষাগত প্রসারসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরার জন্য স্থায়ী ভেন্যু হলে বই মেলাসহ বিভিন্ন মেলা উদযাপনও সেই ভেন্যুতে করতে পারি। সংশ্লিষ্টদের মতামতের ভিত্তিতে এ ব্যাপারে স্থায়ী ভেন্যুর রূপদানের চেষ্টা করবো।
লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত এ স্বাধীনতা- উল্লেখ করে তিনি বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধারাসহ যারা দেশের স্বাধীনতার জন্য প্রাণ উৎসর্গ করেছেন এই বিজয় মেলার সূচনা লগ্নে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতাসহ বিজয় মেলা সাফল্যমন্ডিত করার জন্য জেলা প্রশাসনসহ যারা উদ্যোগ নিয়েছেন তাদের সাধুবাদ জানাই।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম বলেন, চট্টগ্রাম কৃষ্টি-কালচারের জেলা। এখানে প্রতিবছর বই মেলা, বাণিজ্য মেলা, বিজয় মেলা ও অন্যান্য মেলা হয়ে থাকে। মেলার স্থায়ী ভেন্যু নির্বাচন করার জন্য আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে। খেলার মাঠে মেলা হবে না। এজন্য আউটার স্টেডিয়াম থেকে সরিয়ে এনে সার্কিট হাউজ সংলগ্ন ভেঙ্গে ফেলা পুরনো শিশু পার্কের পরিত্যক্ত মাঠেই (সেনাবাহিনীর সম্পত্তি) জেলা প্রশাসন এবার সপ্তাহব্যাপী বিজয় মেলার আয়োজন করেছে। সবার সাথে কথা বলে এমন একটি ভেন্যু নির্বাচন করবো যেখানে শুধু মেলাগুলো হবে। আউটার স্টেডিয়াম মাঠকে খেলার উপযোগী করে তোলা হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেন।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও বিজয় মেলা উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক ফরিদা খানমের সভাপতিত্বে ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খন্দকার ফারজানা নাজনীন সেতু’র সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন বিজয় মেলা উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব আহমেদ নেওয়াজ। বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব অন্তর্র্বতী কমিটির সদস্য সচিব ও সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সভাপতি জাহিদুল করিম কচি, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিএমইউজে) সভাপতি মোহাম্মদ শাহ নওয়াজ, মহানগর বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা একরামুল করিম ও ছাত্র প্রতিনিধি মো. জোবায়ের।
উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা দল চট্টগ্রাম উত্তর-দক্ষিণ-মহানগর নির্বাহী কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কামাল উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলু বারিক, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের উপপরিচালক (স্থানীয় সরকার) মো. নোমান হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো.কামরুজ্জামান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এল.এ) এ.কে.এম গোলাম মোর্শেদ খান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) সৈয়দ মাহবুবুল হক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. শরীফ উদ্দিন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. সাদি উর রহিম জাদিদ, জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, মেলা উদযাপন পরিষদের কর্মকর্তা-সদস্য ও জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মচারীরা।
মেলায় প্রতিদিনের আয়োজনে থাকছে- আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ও বিজয়ের কথামালা। ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৬৯’র গণ অভ্যুত্থান, ৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধ, ৯০’র গণ অভ্যুত্থান ও ২৪’র গণ অভ্যুত্থানের মূল্যবোধ বিষয়ক স্মৃতিচারণ।