ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা গর্বের সঙ্গে “ফ্লেভারফুল বাংলাদেশ”-এর ১০ দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক, খাবার ও শিল্প উৎসবের ১০ম ও শেষ দিনের অনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করেছে। হারনেট ফাইন আর্টস, হারনেট ফাউন্ডেশন, এবং প্রধান সহযোগী বিকাশ-এর সহ-আয়োজনে আয়োজিত এই উৎসবটি ১৫ থেকে ২৪ মে ২০২৫ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়। এই উৎসবে বাংলাদেশের ঐতিহ্যকে তুলে ধরা হয়েছে এক ঝলমলে পরিবেশনায়, যেখানে ছিল আঞ্চলিক খাবারের সম্ভার, শিল্পকর্ম প্রদর্শনী এবং সান্ধ্যকালীন সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।

উৎসবের সূচনা হয় এক জমকালো প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে, যেখানে উদ্বোধন করেন ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা-র জেনারেল ম্যানেজার মি. অলিভার লোেরক্স এবং ডিরেক্টর অফ সেলস মি. সাদমান। তারা তাদের বক্তব্যে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে তুলে ধরার জন্য হোটেলটির দীর্ঘস্থায়ী প্রতিশ্রুতির কথা তুলে ধরেন।

উৎসবের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল হারনেট ফাইন আর্টস, যার প্রধান কিউরেটর আলিশা প্রাধান এই দশ দিনব্যাপী এক্সক্লুসিভ আর্ট এক্সিবিশন কিউরেট করেন, যেখানে বাংলাদেশের ৪০ জন স্বনামধন্য শিল্পীর চিত্রকর্ম প্রদর্শিত হয়। প্রতিদিন ছিল লাইভ মাস্টার পেইন্টিং সেশন, যেখানে দর্শনার্থীরা শিল্পীদের সরাসরি কাজ করার দৃশ্য উপভোগ করার সুযোগ পান।
প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী শিল্পীরা ছিলেন:
- মনিরুল ইসলাম
- ফারিদা জামান
- ড. মোহাম্মদ ইকবাল
- মোহাম্মদ ইউনুস
- আহমেদ সামসুদ্দোহা
- শেখ আফজাল
- আবদুস সাত্তার
- আনিসুজ্জামান আনিস
- প্রীতি আলী
- আলপ্তগিন তুষার
- অধ্যাপক আজহারুল ইসলাম
- সুনীল কুমার
- চঞ্চল
- আবদুস শাকুর শাহ
- নাইমা হক
- রাশেদুল হুদা
- নাদভী হক এবং আরও অনেকে।
প্রতিদিনের সন্ধ্যাগুলো প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় যেখানে সংগীত, নৃত্য এবং কাহিনিচিত্র ছিল এক অপরূপ অভিজ্ঞতা।

উৎসবে উপস্থিত ছিলেন:
- প্রধান অতিথি নরওয়ের মাননীয় রাষ্ট্রদূত হাকন আরাল্ড গুলব্র্যান্ডসেন
- ব্রুনেইয়ের রাষ্ট্রদূত হারিস ওথমান
- আলিয়স ফ্রঁসেজ-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর মি. ফ্রঁসোয়া
- ইউল্যাব বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর জুড
- হারনেট ফাইন আর্টস-এর চেয়ারপারসন মি. মনির প্রাধান
- রাশিয়ান দূতাবাসের কূটনীতিকগণ
- এবং দেশের বিভিন্ন বিশিষ্ট শিল্পানুরাগী ও সম্মানিত অতিথিবৃন্দ।
এলিমেন্টস গ্লোবাল ডাইনিং-এ অনুষ্ঠিত রন্ধন আয়োজনে বাংলাদেশের ৮টি বিভাগের ঐতিহ্যবাহী খাবার পরিবেশন করা হয় যার মধ্যে ছিল সৃজনশীল ফিউশন ডিশ যেমন সাতকরা বিফ ব্রিসকেট এবং চিংড়ি সাগানাকি। সেই সঙ্গে পরিবেশিত হয় ঐতিহ্যবাহী মিষ্টান্ন ও পিঠার বাফেট।
উৎসবের সমাপ্তি লগ্নে হারনেট ফাইন আর্টস আবারও তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশি শিল্প ও শিল্পীদের বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরার জন্য কাজ করে যাওয়া এবং বাংলাদেশের শিল্পকে বৈশ্বিক শিল্প সমাজের সঙ্গে সংযুক্ত করার ব্রিজ হিসেবে কাজ করার অঙ্গীকার।

গত বছর হারনেট ফাইন আর্টস ঘোষণা করেছে বাংলাদেশের শিল্প জগতের জন্য এক মাইলফলক প্রকল্প বাংলাদেশের প্রথম এবং বৃহত্তম আর্ট ডেটা সেন্টার, যা এক ধরনের শিল্প বিষয়ক বিশ্বকোষ হিসেবে কাজ করবে। এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ১০০ জন শিল্পীকে তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইট ও প্রোফাইল উপহার দেওয়া হবে, যা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে শিল্পীকে উপস্থাপনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই ডেটা সেন্টার আন্তর্জাতিক শিল্প সংগঠনের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে বাংলাদেশের শিল্পীদের জন্য সুযোগ তৈরি করবে।
এছাড়াও, প্রতিষ্ঠানটির পরবর্তী বড় উদ্যোগ হিসেবে রয়েছে জাপান দূতাবাসের সঙ্গে যৌথভাবে আয়োজিত ৮ দিনব্যাপী এক বৃহৎ চিত্রপ্রদর্শনী, যা বাংলাদেশের শিল্পকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।

এই অনন্য উৎসবটির বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে প্রধান সহযোগী বিকাশ, উপহার সহযোগী স্কিন জেন ও প্রবাসী হেলিকপ্টার, এবং সর্বোপরি ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা-র অসাধারণ আতিথেয়তা ও দূরদর্শী উদ্যোগ “ফ্লেভারফুল বাংলাদেশ”-এর জন্য, যা রাজধানীর কেন্দ্রস্থলে রন্ধন, শিল্প ও সাংস্কৃতিক কূটনীতির অসাধারণ সংমিশ্রণ উপস্থাপন করেছে।