আন্দোলনরত ৮ দলের উদ্যোগে খুলনা বিভাগীয় সমাবেশ সোমবার (১ ডিসেম্বর) বিকেলে নগরীর ঐতিহাসিক বাবরী চত্বরে (শিববাড়ী মোড়) অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “আমরা ৮ দলের বিজয় চাই না, চাই বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের বিজয়। আমরা দুর্নীতিমুক্ত সমাজ, ন্যায়বিচার ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতা চাই।” তিনি অভিযোগ করেন, ৫ আগস্ট বিপ্লবের পর বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি ও অরাজকতা বেড়েছে এবং প্রশাসনের ওপর অপপ্রভাব বিস্তার করা হচ্ছে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর পীরসাহেব চরমোনাই মুফতী সৈয়দ মো. রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমীর আল্লাম মামুনুল হক, খেলাফত মজলিসের সিনিয়র নায়েবে আমীর মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন, নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মুফতি মুসা বিন ইযহার, খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা ইউসুফ সাদিক হক্কানী, জাগপার সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান, বিডিপির চেয়ারম্যান এডভোকেট আনোয়ারুল ইসলাম চাঁনসহ বিভিন্ন ইসলামী ও জাতীয় দলের শীর্ষ নেতারা।
দুপুর ১২টায় পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে সমাবেশ শুরু হয়। সঞ্চালনায় ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য ও খুলনা মহানগরী সেক্রেটারি এডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলাল এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহানগর সহ-সভাপতি শেখ মো. নাসির উদ্দিন। বিভিন্ন দলের নেতৃবৃন্দ সমাবেশে দেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, দুর্নীতিমুক্ত রাষ্ট্র গঠন এবং গণতান্ত্রিক অধিকারের প্রশ্নে বক্তব্য রাখেন।

ডা. শফিকুর রহমান তরুণ ভোটারদের উদ্দেশে বলেন, “এবার তোমাদের ভোট নিয়ে কেউ ছিনিমিনি করতে চাইলে তা হতে দেব না। তোমাদের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই আমরা একসঙ্গে করব।” শিক্ষা ব্যবস্থার বৈষম্য, মাদকাসক্তি, সন্ত্রাস এবং দুর্নীতিকে দেশের অগ্রগতির বড় বাধা বলে উল্লেখ করেন তিনি।

পীরসাহেব চরমোনাই বলেন, সরকার নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত না থাকার অজুহাতে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। তিনি দাবি করেন, ৮ দল নির্বাচনের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত, তবে ক্ষমতাসীনরা জনসমর্থন হারানোর ভয়ে ষড়যন্ত্র করছে।

মামুনুল হক তার বক্তব্যে বলেন, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করতে জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজন অপরিহার্য। একই সঙ্গে তিনি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য দোয়া কামনা করেন।
অন্য বক্তারা বলেন, ৮ দল ক্ষমতায় গেলে দেশে চাঁদাবাজি ও দুর্নীতি থাকবে না। জনগণ ইতোমধ্যে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে, তাই যে কোনো ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করা সম্ভব হবে। বক্তারা আল্লাহর আইন অনুযায়ী দেশ পরিচালনা, সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং ন্যায়ভিত্তিক সমাজ নির্মাণের আহ্বান জানান।
বক্তারা আরও বলেন, গণভোট ছাড়া নির্বাচন নয়—আগে গণভোট, পরে নির্বাচন। পিআর পদ্ধতি উভয় কক্ষে চালুর দাবি জানান।
সমাবেশে স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতারা আগামী নির্বাচনে ৮ দলকে বিজয়ী করে “দুর্নীতিমুক্ত শান্তির বাংলাদেশ” গড়ে তুলতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানান। তারা বিশ্বাস প্রকাশ করেন যে, ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে পারলে জাতীয় সংসদে মজলুম মানুষের অধিকার রক্ষার নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে।











