June 18, 2025

শিরোনাম
  • Home
  • সারাদেশ
  • অধিকাংশ ইউপি চেয়ারম্যানের জনপ্রতিধিরা আত্মগোপনেঃ চরমভাবে ব্যহত নাগরিক সেবা

অধিকাংশ ইউপি চেয়ারম্যানের জনপ্রতিধিরা আত্মগোপনেঃ চরমভাবে ব্যহত নাগরিক সেবা

Image

প্রতিবেদকঃ ছাত্রদের বৈষম্য আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর স্থবির হয়ে পড়েছে দেশের ইউনিয়ন পরিষদের সেবা কার্যক্রম। আওয়ামী লীগপন্থি ইউপি চেয়ারম্যানদের বেশির ভাগই এখন আত্মগোপনে। অনেকের মোবাইল ফোনও বন্ধ। ফলে উন্নয়নমূলক কাজ, ট্রেড লাইসেন্স, জন্মনিবন্ধন ও মৃত্যুসনদ প্রদান কার্যক্রম একবারেই বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সেবা গ্রহীতারা যেমন বিপাকে পড়েছে তেমনি সরকারি কর-খাজনা আদায়ে ধ্বস নেমেছে। তবে কেউ কেউ কর্মস্থলে না এসেও অজ্ঞাত স্থান থেকে গোপনে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এদিকে স্থবিরতা নিরসনে স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে অনুপস্থিতদের তালিকাও করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। দেশের কয়েক” হাজর নির্বাচিত চেয়ারম্যাদের সিংহ ভাগই বিগত ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী সরকারের নেতাও দোসর । সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে ঘের দখল, জমি দখল, হাট-বাজার ইজারা, গ্রাম্য সালিশের নামে প্রতিপ্ষকে ঘায়েল করতে মোটা অংকের চাঁদাবাজি, এমন কোন অপকর্ম নেই যেটা পরিষদের চেয়ারম্যানরা করে নাই । দীর্ঘ ১৬বছর নৌকার মাঝি হয়ে ধরাকে সরা জ্ঞান মনে না করে সাধারন জনগনের বুকে পাথর চাপানোর মদ্যদিয়ে লুট-তরাজ করেছে ওই সকল চেয়ারম্যানরা। ফরে শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবর শুনেই জনরোষের শিকার এড়াতে আত্নগোপনে গেছেন পরিষদের চেয়ারম্যানরা

মনিরামপুর প্রতিনিধি জানানঃ যশোর জেলার মনিরামপুর উপজেলায় ১৭টি ইউনিয়েনের ১২জন চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগের। ওই সকল চেয়ারম্যানরা সরাসরি ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঘের দখল, জমি দখল, হাট-বাজার ইজারা, গ্রাম্য সালিশের নামে প্রতিপক্ষকে মামলায় জড়িয়ে ঘায়েল করে মোটা অংকের চাঁদাবাজি,করেছেন। যার মধ্যে দুধর্ষতার সাথে অর্থরাণিজ্য করেছেন ৯নং ঝাঁপা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সামছুল আলম মন্টু ও মশ্বিমনগর ইউনিয়ন পরিষদের আবুল হোসেন। তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে অত্র এলাকার সেবা প্রত্যাশীদের হাজারও অভিযোগ। চেয়ারম্যান মন্টু অধিনন্থ লোকের মাধ্যমে ইউনিয়নের দু”শতাধিক অসহায় পরিবার কে সরকারি ঘর দেওয়ার নাম করে মাথাপিছু ৫-১০হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। যাদের অনেকেই ঘর দেওয়া হয়নি। জন্ম নিবন্ধন ফি হিসেবে মাথাপিছু এক হাজার থেকে দেং হাজার টাকা এছাড়া হোল্ডিং ট্রেস্ক বাবদ প্রত্যেক বাড়ি থেকে ৩শ থেকে এক হাজার টাকা আদায় করলেও সরকারি খাতে জমা না দিয়ে নিজেই আত্নসাত করেছেন। অন্যদিকে সামছুল আলম মন্টু প্রথমবার চেয়ারম্যান হতেই ইউনিয়নের অর্ধশত ব্যাক্তির জমি জবর দখল করার কারনে জনরোষের শিকার এড়াতে আত্নগোপনে যান্। জেলা পুলিশের পক্ষে গ্রেফতারে পুরুস্কার ঘোষনার পর আদালতে আত্নসমর্পন করেন। মশ্বিমনগর ইউনিয়ন পরিষদের আবুল হোসেন। তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে অসহায় ব্যাক্তিদের নামে চালের কার্ড করে দেবার নামে অর্থ আদায়ের বহুবিধ অভিযোগ। সালিশ মিমাংসার নামে চাঁদাবাজি। বিল-খালের দখর দারিত্বের অভিযোগ।

ফরিদগঞ্জ উপজেলায় ভোগান্তির শিকার হচ্ছে ১৫টি ইউনিয়নের মানুষরো। মধ্যে বালিথুবা পূর্ব, গুপ্টি পশ্চিম, পাইকপাড়া দক্ষিণ, গোবিন্দপুর উত্তর গোবিন্দপুর দক্ষিণ, চরদুঃখিয়া পূর্ব, ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ, রুপসা উত্তর ও রুপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের মোট ৯ জন চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ সমর্থিত। সরকার পতনের পর তারাও আত্মগোপনে। কারও কারও বাসায়, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও অফিসে ভাংচুর চালানো হয়। হামলার ঘটনার দুইদিন পর থেকেই প্রতিনিয়ত অফিস করছেন গোবিন্দপুর উত্তর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহ আলম শেখ।

তিনি বলেন, আমি সর্বদাই দল মত নির্বিশেষে সকল পাশে ছিলাম। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় দুইদিন পর থেকেই প্রতিনিয়ত অফিস করছি এবং সাধারণ মানুষের ভোগান্তি নিরসনে কাজ করছি।এছাড়া গুপ্টি পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়, রুপসা উত্তর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাড়িতে ও রুপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা করেছে দুর্বৃত্তরা। এদিকে মুঠোফোনে কয়েকজন ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে কথা হলে তারা জানান, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তারা পরিষদে আসবেন এবং প্রতিনিয়ত মানুষের সেবায় কাজ করবেন। এ বিষয়ে জানতে ফরিদগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌলি মন্ডলের মুঠোফোন কয়েক বার ফোন করলেও তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, স্থানীয় চেয়ারম্যানরা কেন নিজ নিজ পরিষদের যাচ্ছেন না তা আমার জানা নেই। আমি তাদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করবো। জনসাধারণের ভোগান্তির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই সমস্যা নিরসনে দ্রুতই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের তিনটি স্বতন্ত্র ছাড়া অন্যগুলো ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ সমর্থিত। সে কারণে অনেক চেয়ারম্যানের মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা পরিষদে না থাকায় ব্যাহত হচ্ছে ইউপি থেকে দেওয়া বিভিন্ন সনদ ও জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনের মতো নাগরিক সেবা কার্যক্রম। সেবা নিতে আসা সাধারণ জনগণ পড়েছে বিপাকে। পাইকগাছার ১০ ইউপি চেয়ারম্যান আত্মগোপনে, নাগরিক সেবা ব্যাহত।

অপরদিকে খুলনা পাইকগাছা প্রতিনিধি জানান,, পাইকগাছার ১০ ইউপি চেয়ারম্যান আত্মগোপনে, নাগরিক সেবা ব্যাহতবৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর পর খুলনার পাইকগাছার ১০ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানরা আত্মগোপনে চলে যান। তাতে ইউপি কার্যালয়ে নাগরিক সেবা ব্যাহত হচ্ছে।

উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের তিনটি স্বতন্ত্র ছাড়া অন্যগুলো ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ সমর্থিত। সে কারণে অনেক চেয়ারম্যানের মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা পরিষদে না থাকায় ব্যাহত হচ্ছে ইউপি থেকে দেওয়া বিভিন্ন সনদ ও জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনের মতো নাগরিক সেবা কার্যক্রম। সেবা নিতে আসা সাধারণ জনগণ পড়েছে বিপাকে। উপজেলার সোলাদানা ইউনিয়নের বাসিন্দা প্রশান্ত মণ্ডল বলেন, ‘আমি ভিসা করার জন্য পরিচয়পত্র নিতে যাই। ইউপি চেয়ারম্যান না থাকায় কয়েকবার ফিরে এসেছি। মোবাইল ফোনে একাধিক ইউপি সদস্য বলেন, পর্যাপ্ত নিরাপত্তা না থাকায় এবং চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে আমরা পরিষদ খুলতে পারি না।’ পাইকগাছার ১০ ইউপি চেয়ারম্যান আত্মগোপনে, নাগরিক সেবা ব্যাহত হচ্ছে।

অন্যদিকে- সিলেটের ১৩ উপজেলার মধ্যে ১১টিতে আওয়ামীপন্থী চেয়ারম্যান রয়েছেন। তদের মধ্যে বেশিরভাগই এখন ‘আত্মগোপনে’ রয়েছেন। অনেকেই দেশত্যাগ করেছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।
৫ আগস্টের পর থেকে ১৩ আগস্ট পর্যন্ত অফিসে আসেননি বেশিরভাগ চেয়ারম্যানরা। মোবাইলও বন্ধ করে রেখেছেন অনেকে। স্থানীয়রা বলছেন- সরকার পতনের পর থেকে চেয়ারম্যানদের দেখা মিলছে না। অনেকের মুঠোফোনও রয়েছে বন্ধ। কেউ কেউ অফিস করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তবে অনেকেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিষিক্রিত ও নিজের নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকার কারণে এখন পর্যন্ত আত্মগোপনে রয়েছেন।

‘আত্মগোপনে’ থাকা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানরা হলেন- সিলেট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সুজাত আলী রফিক, ওসমানীনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সিলেট জেলা যুবলীগের সভাপতি ভিপি শামীম আহমদ, বালাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও বালাগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনহার মিয়া, জৈন্তাাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লিয়াকত আলী, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক মো. মজির উদ্দিন, গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ার ম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য মঞ্জুর কাদির শাফি চৌধুরী এলিম, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আশফাকুল ইসলাম সাব্বীর এবং জকিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও প্রবীন আওয়ামী লীগ নেতা লোকমান উদ্দিন চৌধুরী।

তবে লোকমান চৌধুরীর দীর্ঘদিন থেকে অসুস্থ থাকায় অফিস করতে পারছেন না বলে জানা গেছে। এদিকে বিয়ানীবাজার উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কাশেম পল্লব নিয়মিত অফিস করছেন। আর দক্ষিণ সুরমা উপজেলা চেয়ারম্যান বদরুল ইসলাম আজ মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) থেকে অফিস করতে শুরু করেছেন বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। এছাড়া বিশ্বনাথ ও গোয়াইনঘাটে বিএনপি পন্থী চেয়ারম্যান থাকায় তারা নিয়মিত অফিস করছেন বলে জানা গেছে।

আত্মগোপনে থাকা চেয়ারম্যানদের ঘনিষ্ঠজনেরা জানিয়েছেন, তারা অফিস করছেন না হামলা ও সহিংসতার আশঙ্কায়। কারণ এই মুর্হুতে পুলিশ আইনশৃঙ্খরা নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে না। এদিকে, বিভিন্ন জায়গায় ইউনিয়ন পরিষেদর চেয়ারম্যানরাও নিয়মিত অফিস করছেন না বলে জানা গেছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে দেওয়া বিভিন্ন সনদ ও জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনের মতো নাগরিক সেবা কার্যক্রম। সেবা নিতে আসা সাধারণ জনগণ পড়েছেন চরম বিপাকে। এ ব্যাপারে বক্তব্য নিতে আত্মগোপনে থাকা বেশিরভাগ চেয়ারম্যানের মুঠোফোনে কল দিলে তা বন্ধ পাওয়া গেছে। অনেকের হোয়াটসঅ্যাপে কল দিলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।

পাইকগাছার ১০ ইউপি চেয়ারম্যান আত্মগোপনেঃ ফ্যাসিষ্ট খুনী হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর পর খুলনার পাইকগাছার ১০ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানরা আত্মগোপনে চলে যান। তাতে ইউপি কার্যালয়ে নাগরিক সেবা ব্যাহত হচ্ছে। উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের তিনটি স্বতন্ত্র ছাড়া অন্যগুলো ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ সমর্থিত। সে কারণে অনেক চেয়ারম্যানের মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা পরিষদে না থাকায় ব্যাহত হচ্ছে ইউপি থেকে দেওয়া বিভিন্ন সনদ ও জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনের মতো নাগরিক সেবা কার্যক্রম। সেবা নিতে আসা সাধারণ জনগণ পড়েছে বিপাকে।

উপজেলার সোলাদানা ইউনিয়নের বাসিন্দা প্রশান্ত মন্ডল বলেন, ‘আমি ভিসা করার জন্য পরিচয়পত্র নিতে যাই। ইউপি চেয়ারম্যান না থাকায় কয়েকবার ফিরে এসেছি। মোবাইল ফোনে একাধিক ইউপি সদস্য বলেন, পর্যাপ্ত নিরাপত্তা না থাকায় এবং চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে আমরা পরিষদ খুলতে পারি না।’
লস্কর ইউপি চেয়ারম্যান কে এম আরিফুজ্জামান তুহিন বলেন, ‘আমার বাড়ি ও মোটরসাইকেল দুর্বৃত্তরা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। নিরাপত্তার অভাবে পরিষদে যাচ্ছি না। পরিবেশ ঠিক হলে আবার ইউর সেবা কার্যক্রম শুরু করব। আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টা জানিয়েছি। তিনি বলেছেন, পরিবেশ ঠিক হলে জানাবেন। তবে আগামী রোববার থেকে অফিসে বসব।’

গদাইপুর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ জিয়াদুল ইসলাম বলেন, ‘আমার ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি করা হয়েছে। পরিবেশ ঠিক হলে পরিষদের সেবা চালু করা হবে।’ সোলাদানা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মানান বলেন, ‘আমার বাড়িঘর ও কোটি টাকার গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি নিরাপত্তার অভাবে আত্মগোপনে আছি। পরিবেশ ঠিক হলে সেবা কার্যক্রম চলবে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহেরা নানীন বলেন, ‘রাজনৈতিক কারণে হয়তো অনেকে ইউপি কার্যালয়ে যাচ্ছেন না। চেয়ারম্যান, সচিব, সবাইকে বলেছি নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে হবে।’

ঢাকার নবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: জানিয়েছেন- হাসিনা সরকার পদত্যাগের পর সারাদেশের বেশিরভাগ ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যানরা এলাকায় নেই। একই অবস্থা বিরাজ করেছে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলায়। সরকার পতনের পর ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয় থেকে ১৪টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আত্মগোপনে চলে যায়। এতদিন পার হলেও এখনও চৌদ্দটি ইউনিয়নের দলীয় (নৌকা) প্রতিকের চেয়ারম্যান কার্যালয়ে ফিরেনি। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে সেবাগ্রহীতাদের। এরমধ্যে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নাগরিক সনদ, জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন সনদসহ বিভিন্ন নাগরিক সনদের জন্য দিনের পর দিন ঘুরে যেতে হচ্ছে সেবাগ্রহীতাদের।

নবাবগঞ্জের গালিমপুর, আগলা, জয়কৃষ্ণপুর, যন্ত্রাইল, কৈলাইল, বারুয়া খালীসহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে সরেজমিনে গেলে একাধিক সেবাগ্রহীতা অভিযোগ করে বলেন, ‘চলমান পরিস্থিতির কারণে আমরা নাগরিক সেবা পাই না। জন্মনিবন্ধনের জন্য কয়েকদিন ধরে ঘুরতে হচ্ছে। নাগরিক সনদ অনেক প্রয়োজন, সেটির জন্য প্রতিদিনই ঘুরে যাই পরিষদে এসে। চেয়ারম্যানরা পরিষদে না থাকায় এমন জনদুর্ভোগ হয়েছে বলেও জানান তারা। স্থানীয় সরকার বিভাগ ঢাকা জেলার উপ-পরিচালক ফারজানা জামান সাংবাদিকেদের বলেন, ‘শুধু জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন কাজের জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে আমরা চিঠি পেয়েছি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তা বাস্তবায়ন করবে। গত বৃহস্পতিবার থেকে এই কার্যক্রম চালু হয়েছে। আশা করি, এই সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে জটিলতা থাকবে না।

এদিকে বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি জানিয়েছেন- সেখানে ৯টি উপজেলা, ৩টি পৌরসভা ও ৭৫টি ইউনিয়ন রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান মেয়র, কাউন্সিলর, উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য, নারী ইউপি সদস্য মিলে ১ হাজার ৪১ জন জনপ্রতিনিধি রয়েছে। যাদের বেশিরভাগ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গেল ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ত্যাগের পরে জেলার বেশিরভাগ নেতাকর্মীরা গা ঢাকা দিয়েছেন। কেউ কেউ এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন সুবিধামত স্থানে। নিজ কার্যালয়ে আসছেন না অধিকাংশ জনপ্রতিনিধি। যার ফলে জন্মসনদ, মৃত্যু নিবন্ধন, নাগরিক সনদ, ট্রেড লাইসেন্স, ওয়ারেশকায়েম সনদসহ কোেনা প্রকার সেবা পাচ্ছে না নাগরিকরা।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত গোটাপাড়া ও বেমরতা ইউনিয়ন পরিষদ ঘুরে তেমন কোনো জনপ্রতিনিধির দেখা মেলেনি। বাগেরহাট পৌরসভারও একই চিত্র দেখা যায়।

বৃহস্পতিবার সারাদিন জেলার বিভিন্ন স্থানে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কোথাও জন প্রতিনিধিদের উপস্থিতি নেই। জনপ্রতিনিধিদের অফিস কক্ষে তালা মারা। নাগরিক সেবা নিতে এসে ফিরে যাচ্ছে সেবাপ্রত্যাশীরা রামপাল উপজেলার বাইনতলা ইউনিয়ন পরিষদের সেবা নিতে আসা আরিফা বেগম বলেন, তিন চারদিন ধরে আসতেছি কিন্তু জন্ম নিবন্ধনের জন্য চেয়ারম্যান মেম্বার কেউ আসে না। জন্ম নিবন্ধনের সবকিছু ঠিকঠাক শুধু চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর বাকি। এই স্বাক্ষরের জন্য জানি না আর কতদিন এভাবে ঘুরতে হবে। বাগেরহাট সদর উপজেলার খানপুর ইউনিয়ন পরিষদে ট্রেড লাইসেন্স নিতে আসা আলিমুজ্জামান বলেন, আগেও কত ভোগান্তি পোহাইতে হয়েছে। এখন চেয়ারম্যান না থাকায় আরও ভোগান্তির মাঝে পড়তে হচ্ছে আমাদের। জানি না এই ভোগান্তি কবে শেষ হবে। আমরা চাই দ্রুত তারা ফিরে আসুক এবং সাধারণ কার্যক্রম সবকিছু চলুক।

হরিণখানা এলাকার বাসিন্দা আনিরুল ইসলাম বলেন, একটি জরুরী প্রয়োজনে নাগরিকত্বের সনদ প্রয়োজন। তাই পৌরসভায় আসছিলাম কিন্তু মেয়র না থাকায় কেউ দিতে পারেনি। কিছুক্ষন অপেক্ষার পরে দেখা মিলল কোহিনুর আক্তার ডালিম নামের এক নারী কাউন্সিলরের সঙ্গে। তিনি বলেন, কয়েকদিন ধরে মেয়রসহ কোনো কাউন্সিলর আসেন না অফিসে। আসলে মেয়র না থাকলে তো অফিসিয়াল কাজ করা যায় না। তারপও মাঝে মধ্যে এসে ঘুরে যাই। এদিকে বাগেরহাট সদরের কাড়াপাড়া, ষাটগম্বুজ, কচুয়ার রাড়িপাড়া, বাধালসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদে একই চিত্র পাওয়া যায়। তবে কোথাও কোথাও পরিষদের উদ্যোক্তা ও সচিবদের দেখা যায়। কাড়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, অফিসে আসি। অনেক নাগরিকও আসেন সেবা নিতে। কিন্তু চেয়ারম্যান না থাকায় আমরা কোনো সেবা দিতে পারি না। যারা আসেন তাদেরকে বুঝিয়ে পাঠিয়ে দেই।

এদিকে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের চাহিদা অনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলার চেয়ারম্যানসহ জনপ্রতিনিধিদের কর্মস্থলে না থাকার তালিকা স্থানীয় সরকার বিভাগে পাঠিয়েছেন স্থানীয় সরকার বিভাগ, বাগেরহাটের উপ-পরিচালক ডা. মো. ফখরুল হাসান। পাঠানো তথ্য অনুযায়ী ৫০ শতাংশ জনপ্রতিনিধি কর্মস্থলে উপস্থিত নেই। স্থানীয় সরকার বিভাগ, বাগেরহাটের উপ-পরিচালক ডা. মো. ফখরুল হাসান বলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের চাহিদা অনুযায়ী আমরা জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকা ও না থাকার একটা তালিকা পাঠিয়েছি। মন্ত্রণালয় থেকে পরবর্তী নির্দেশনা এলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

Scroll to Top