December 26, 2024

শিরোনাম

ব্যবসায়ী সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে ব্যবসায়ীদের এক হওয়ার আহ্বান।

Image

অনলাইন ডেস্কঃ

বুধবার (১৪ আগস্ট) বিকালে প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলের বলরুমে ‘দেশের বর্তমান সার্বিক ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিস্থিতি এবং ভবিষ্যত করণীয়’ বিষয়ে ব্যবসায়ী সম্মেলনে এ দাবি ওঠে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি ও ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স, বাংলাদেশ (আইসিসি) এর সভাপতি মাহবুবুর রহমান। সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু।

ব্যবসায়ীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান আবদুল আউয়াল মিন্টু। পাশাপাশি তিনি সদস্যদের সমস্যা সমাধান করতে না পারলে বাণিজ্য সংগঠনের নেতাদের দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র ও অর্থনীতি একে অপরের সম্পূরক ও পরিপূরক। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন দেব। একই সঙ্গে দাবি থাকবে, যত দ্রুত সম্ভব কিছু কিছু প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার করে গণতান্ত্রিক সরকারের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করা। দেশের অনেকেই সম্পদ সৃষ্টি ছাড়া বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছেন। গণতন্ত্র ও জবাবদিহি ছাড়া এসব বন্ধ করা যাবে না।’

ব্যবসায়ী সম্মেলনে পণ্যভিত্তিক বিভিন্ন খাতের বাণিজ্য সংগঠন ও চেম্বারের বর্তমান এবং সাবেক নেতারাসহ কয়েক শ ব্যবসায়ী উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনে দর্শক সারিতে ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন, এ কে আজাদ ও জসিম উদ্দিন; স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন চৌধুরী; ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আশরাফ আহমেদ, সাবেক সভাপতি রিজওয়ান রহমান প্রমুখ।

সভাপতির বক্তব্যে মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হাতকে শক্তিশালী করতে না পারলে আমরা যে সংস্কার প্রত্যাশা করছি, তা অর্জিত হবে না।’ এখনো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সম্মেলনে বক্তারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ও আহতদের স্মরণ করেন। এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক আফজাল হোসেন বলেন, ছোট ছোট বাচ্চারা যে সুযোগ নিয়ে এসেছে, সেটার সদ্ব্যবহার করতে হবে। সুন্দরভাবে দেশটা গড়ে তুলতে হবে। পেছনের ভেদাভেদ ভুলে যেতে হবে।

এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি ও সহসভাপতি কে হবেন, তা সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে ঠিক করে দেওয়াটা রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। ফলে সরকারের ব্যবসায়ী শাখায় পরিণত হয়েছে এফবিসিসিআই। সম্মেলনে কয়েকজন এফবিসিসিআইয়ের বর্তমান পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার দাবি করেন। তাঁদের একজন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সহসভাপতি আবুল কাশেম হায়দার বলেন, ‘ফেডারেশন থেকে মনোনীত পদ বাতিল করতে হবে। বর্তমান পর্ষদের ওপর অনাস্থা জানাই। অবিলম্বে পদত্যাগ করুন।’ তাঁর এই বক্তব্যের সময় এফবিসিসিআইয়ের অনেক সাধারণ সদস্য চিৎকার করে সমর্থন দেন।

এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি জসীম উদ্দিন বলেন, আমাদের একত্র হয়ে থাকতে হবে। ব্যবসায়ীদের মধ্যে বিভেদ থাকা যাবে না। এফবিসিসিআই রিফর্ম করা দরকার। এটিকে সবাই মিলে ব্যবসায়ীদের কণ্ঠস্বর হিসেবে তৈরি করতে হবে।

স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন চৌধুরী বলেন, ‘আমরা একটা ক্রান্তিকালের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের বাচ্চারা দেখিয়ে দিয়েছে কীভাবে দেশকে ভালোবাসতে হয়; কীভাবে পরিবর্তন আনতে হয়।

বিটিএমএর সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল বলেন, সত্যিকারের প্রতিনিধি হলে বুক ফুলিয়ে কথা বলতে হবে। ট্যাক্স বেশি নিতে পারলে ইনটেনসিভ দেয়া হয় সরকারি কর্মকর্তাদের। তাদের বেতন বাড়ানো হোক। ইনটেনসিভ কেন দেবে। এটা নিয়ে দরকার হলে হাইকোর্টে যাব।

ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি সবুর খান বলেন, ‘সুবিধাভোগী কর কর্মকর্তাদের করনথি নিরীক্ষা করা হোক। অর্থ নিয়ে অসামঞ্জস্য পাওয়া গেলে সরকারের কোষাগারে তা জমা দেওয়া হোক।’

এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদ ব্যবসায়ী নেতাদের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একটি বার্তা দেয়ার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, তার (ড. ইউনূস) সঙ্গে দেখা করে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে একটি ম্যাসেজ দেয়া দরকার যে আমাদের দেশের আইনশৃঙ্খলা ঠিক আছে, বিদেশের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো আছে, রফতানিতে কোনো অসুবিধা হবে না। আইন শৃঙ্খলা রিস্টোর করা দরকার। আপনারা জরুরি ভিত্তিতে উপদেষ্টার কাছে তুলে ধরেন। যেসব চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশন আছে আমরা বসে সেগুলোর সমস্যার সমাধান করব।

সভায় আরো বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআইর সাবেক পরিচালক আফজাল হোসেন, আব্দুল হাসান, আবদুল ওয়াহেদ, এফবিসিসিআইর সাবেক সহ-সভাপতি হাবিবুল্লাহ ডন, বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান প্রমুখ। সভায় দেশের সব খাতের প্রতিনিধিত্বকারী ব্যবসায়ী এবং আঞ্চলিক চেম্বারগুলোর ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

Scroll to Top