চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ
চট্টগ্রামে বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করা হয়েছে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদ বুদ্ধিজীবীদের। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল থেকে নগরের পাহাড়তলী বধ্যভূমিতে ফুল দিয়ে শহীদদের শ্রদ্ধা জানানো হয়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়রসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। এছাড়া সকাল থেকে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠন দল বেঁধে এসে একাত্তরের শহীদ বুদ্ধিজীবীদের ফুল দিয়ে স্মরণ করেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পাহাড়তলী বধ্যভূমি সংরক্ষণে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হবে জানিয়ে চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘এই বধ্যভূমি সংরক্ষণ করে এখানে সর্বসাধারণ যাতে আসতে পারেন; সেই উদ্যোগ নেওয়া হবে। এখানে অবশ্যই ইতিহাসকে সংরক্ষণ করব। আমার বন্ধু ডা. রফিকুলের বড়ভাই আবুল মুনসুরকে ধরে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এমন অসংখ্য পরিবার আছে যাদের কথাগুলো লেখা নেই ইতিহাসে।’
তিনি আরও বলেন, ‘চট্টগ্রামে সাগরিকা স্টেডিয়াম বীরশ্রেষ্ঠ রহুল আমীনের নামে করা হয়েছিল। কিন্তু আজ বীরশ্রেষ্ঠদের নামগুলো বিস্মৃত হয়ে যাচ্ছে। তাদের স্থলে আমরা আমাদের রাজনীতিবিদদের নাম ঢুকিয়ে দিচ্ছি। যতদিন মেয়র হিসেবে থাকবো, যতদিন জনগণ আমাকে এখানে রাখবে; ততদিন অবশ্যই প্রকৃত ইতিহাস সংরক্ষণ করার চেষ্টা করবো। জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তানদের যারা প্রাণ দিয়েছেন অকাতরে তাদেরকে তাদের জায়গা ফিরিয়ে দেবো। এই জুলাই-আগস্টে যেসব ছাত্র-শ্রমিক ভাইয়েরা জীবন দিয়েছেন তাদেরকেও স্মরণে রাখতে হবে।’
বধ্যভূমিতে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা নিবেদনকালে মেয়র বলেন, ‘আমরা মনে করি, ১৯৭১ এর ১৪ ডিসেম্বর জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তানদের পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। বুদ্ধিজীবীরাই দেশের মেরুদন্ড।’
প্রসঙ্গত, মহান মুক্তিযুদ্ধে পরাজয় নিশ্চিত জেনে ১৯৭১ সালের এই দিনে দখলদার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার চক্রান্ত করে। এ দেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর, আলশামসদের সঙ্গে নিয়ে শিক্ষক, বিজ্ঞানী, চিন্তক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিল্পী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, ক্রীড়াবিদ, সরকারি কর্মকর্তাসহ বহু মানুষকে হত্যা করে হানাদাররা। সেই থেকে দিনটি শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।